ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সাধারণ মানুষের জন্য ডিসি অফিসের দরজা-জানালা খোলা রাখুন: হাইকোর্ট

অনলাইন প্রতিবেদন :: সাধারণ মানুষের জন্য জেলা প্রশাসক (ডিসি) অফিসের দরজা-জানালা খোলা রাখতে বলেছেন হাইকোর্ট। পাশাপশি কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসককে তার অফিসের দরজা-জানালার পর্দা সরিয়ে ফেলতে বলেছেন উচ্চ আদালত। যেন কুষ্টিয়ার জনগণ তাকে দেখতে পায়।

আদালত অবমাননা সংক্রান্ত এক মামলায় কুষ্টিয়ার ডিসি-এসপিসহ চারজন হাজির হলে সোমবার বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন। তবে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো: সাইদুল ইসলামকে অব্যাহতি দিলেও বাকিদের আগামী ২৪ অক্টোবর হাজির থাকতে হবে। একইসঙ্গে ওইদিন শুনানির জন্য পরবর্তী দিন রেখেছেন।

আদালতে আবেদনকারী আইনজীবী রাগিব রউফ চৌধুরী বলেন, একটি সম্পদের নিলামের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে আমরা হাইকোর্টে রিট দায়ের করি। ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট নিলাম প্রক্রিয়া স্থগিত করেন। হাইকোর্টের এ আদেশের পরও নিলামক্রেতা লোকজন নিয়ে গিয়ে নিলামকৃত সম্পত্তি দখল করেন। আদালতের আদেশ অমান্য করার বিষয়টি আমরা আদালতের নজরে আনি। তখন আদালত ডিসি-এসপিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে হাজির হতে নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কুষ্টিয়ার ডিসি-এসপিসহ সংশ্লিষ্টরা আদালতে হাজির হন। এ মামলায় পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৪ অক্টোবর দিন ঠিক করে দিয়েছেন। ডিসি ছাড়া বাকি সবাইকে ওইদিন হাজির থাকতে বলেছেন আদালত। ডিসি ছাড়া অন্যরা হলেন- কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার, ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি, সদর থানার ওসি, নিলামক্রেতা আব্দুর রশিদ। তবে কোভিডে আক্রান্ত থাকায় ওসি হাজির হতে পারেনি।

আদালত জেলা প্রশাসককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাকে আদালতে আসতে হবে না। তবে আপনাকে সতর্ক করছি। সাধারণ জনগণের জন্য আপনাদের দরজা খোলা রাখবেন। দরজা-জানালায় কোনো পর্দা থাকবে না। মানুষ যাতে আপনাকে দেখতে পারে। সব শ্রেণির মানুষ যাতে আপনাকে দেখতে পারে আপনি বসে কাজ করছেন। লুঙ্গি পরেও যেন একজন মানুষ আপনার কাছে যেতে পারে।

এ সময় আদালত আরও বলেন, আপনারা লাক্সারিয়াস জীবনযাপন করেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে আপনাদের তেমন যোগাযোগ থাকে না।

হাইকোর্ট বলেন, ডিসি হলো সরকারের হার্ট। আপনাকে জনগণের জন্য সেভাবে কাজ করতে হবে। ডিসি অফিসে সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার নেই। দরখাস্ত পর্যন্ত রিসিভ করেন না। নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভালো কাজ করলে দেশ ও জনগণ উপকৃত হবে।
আদালত প্রশ্ন রেখে বলেন, কোথাও চুরি ডাকাতি হচ্ছে, সরকারি সম্পত্তি দখল হয়ে যাচ্ছে, অভিযোগ না পেলে কি আপনি বসে থাকবেন? বসে থাকার সুযোগ নাই।

আদালতে আব্দুর রশিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নুরুল আমিন। ডিসি ও এসপির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুন্সী মনিরুজ্জামান ও ইউসুফ খান, এমডির পক্ষে মিনহাজুল হক চৌধুরী ও ব্যবসায়ী শফিকুলের পক্ষে ছিলেন রাগীব রউফ চৌধুরী।

গত ১১ আগস্ট আদালতের স্থগিতাদেশ থাকার পরও ১২৩ কোটি টাকার সম্পত্তি ১৫ কোটি টাকায় নিলামে বিক্রি করার ঘটনায় ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর এফ হোসাইন, কুষ্টিয়ার ডিসি মো: সাইদুল ইসলাম, এসপি মো. খায়রুল আলম, সদর থানার ওসি মো. সাব্বিরুল আলম ও নিলামে সম্পত্তি নেওয়া ব্যবসায়ী আব্দুল রশিদকে তলব করেন হাইকোর্ট।

পাঠকের মতামত: